ভেলোরে চিকিৎসার খুঁটিনাটি
আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে সিএমসি তে চিকিৎসা করার জন্য এসেছি আমার সমস্ত অভিজ্ঞতা আপনাদের শেয়ার করতে চাই যদি আপনারা কখন এখানে আসেন আমার রিভিউটা পড়লে আপনাদের অনেক অভিজ্ঞতা হবে।
সিএমসি তে আসবার আগে আপনার করনীয় কাজ
১ অবশ্যই আপনার এটিএম কার্ড , ডেবিট কার্ড অথবা ক্রেডিট কার্ড নিয়ে আসবেন।
সিএমসি হসপিটাল এর ভিতরেই এস বি আই SBI এটিএম কাউন্টার আছে,
সিএমসি হসপিটাল এর সেকেন্ড গেটের অপজিট সাইডে ইউকো ব্যাংকের এটিএম আছে।
সিএমসিতে সমস্ত প্রেমেন্ট ক্যাশ অথবা ডেবিট কার্ডের সাহায্যে পেমেন্ট করা যায়। মোবাইলের সাহায্যে অনলাইন পেমেন্ট করা যায় না।
২ মোবাইল ফোনে অনলাইন ট্রানজেকশন সিস্টেম আপলোড করে নিয়ে এলে খুব সুবিধা হবে।
অনলাইন পেমেন্টস যেরকম পেটিএম, গুগোল পে,
পে, ইত্যাদি।
আমি বাজার করার সময় ,সব সময় অনলাইন পেমেন্টস করতাম , এতে দুটো সুবিধা ছিল খুচরো পয়সার কোন সমস্যা হতো না, নগদ টাকা দিয়ে কোন কেনাকাটায় করতে হত না।
আমি পেটিএম এর মাধ্যমে সমস্ত প্রেমেন্ট করতাম।
শুধু মাছের দোকান এবং সিএমসিতে দুধের দোকানে টাকা দিয়ে লেনদেন করতে হতো ওদের কোন রকম অনলাইন সুবিধা ছিল না।
৩ আইআরসিটিসি অ্যাপ টা অবশ্যই ফোনে ডাউনলোড করে নেবেন। পেটিএম ডাউনলোড থাকলে আলাদা করে আইআরসিটিসি অ্যাপ ডাউনলোড করার দরকার নেই। ফেরার সময় কোন ট্রেনে কত টিকিট আছে সেই তথ্যগুলো আপনি জেনে ট্রেনের টিকিট কাটতে পারবেন।
৪ যার চিকিৎসা করার জন্য এখানে আসবেন তার আধার কার্ড অবশ্যই নিয়ে আসবেন।
৫ রোগীর আগের সমস্ত চিকিৎসার কাগজপত্র অবশ্যই নিয়ে আসবেন।
৬ এখানে রান্না করে খাওয়াই ভালো এতে খরচা কম হয়। সুতরাং যথাসম্ভব হালকা ওজনের বাসনপত্র আনাই ভালো। বাসনপত্রের না আনলে সমস্ত ভাষন আপনাকে কিনে নিতে হবে।এখানে সমস্ত রকম বাসনপত্র পাওয়া যায় কোন অসুবিধা হবে না।
৭ আসবার আগে সাধারণ কিছু হোমিওপ্যাথি ওষুধ অথবা অ্যালোপ্যাথি ওষুধ সঙ্গে নিয়ে আসবেন।
হোমিওপ্যাথিতে যেরকম আঘাত লাগলে আর্নিকা বদহজমের জন্য নাক্স ভোম ইত্যাদি।
জ্বরের জন্য ক্যাল্পল।
৮ ট্রেনে কলকাতা থেকে 30 ঘণ্টার সময় নেবে ভেলোরে আসবার জন্য। সুতরাং আপনি যথাসম্ভব শুকনো খাবার নেবেন। যেমন বিস্কুট, কেক ,চিরে ভাজা, পাউরুটি। মাথাপিছু 3 লিটার জল অবশ্যই নিয়ে নেবেন।
৯ যথাসম্ভব লাগেজ হালকা রাখার চেষ্টা করবেন এবং ট্রলিব্যাগ ব্যবহার করবেন এতে আপনার কষ্ট লাঘব হবে।
১০ অনলাইন পেমেন্ট টা নিজের স্থানে একটু ব্যবহার করে শিখে নেবেন তাহলে আর পেমেন্ট করতে কোন রকম ভয় থাকবে না।
এটিএম কার্ড থেকে কিভাবে টাকা তুলতে হয় সেটা অবশ্যই শিখে আসবেন।।
এটিএম কার্ডের পিন নাম্বার নিজে টিপে টিপে দেবেন অন্য কাউকে দেখাবেন না।
১১ এখানে রাস্তাঘাটে নেশাজাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করলে ফাইন আছে। যেমন সিগারেট খাইনি ইত্যাদি। যা করবেন বুঝে শুনে করবেন।
এবার আপনি যাবার জন্য তৈরি।
# জলটা বাড়ি থেকে বয়ে আনার কোন প্রয়োজন নেই ,ট্রেনে ওঠার আগে স্টেশন থেকে প্রয়োজনমতো জলটা অবশ্যই কিনে নিন।
#ভেলোরে আসতে হলে কাঠপটি স্টেশনে নামতে হয়। ভেলোরে স্টেশনে যদি আপনি ভোররাত্রে পৌঁছান তাহলে, সিএমসি হসপিটালে আসার জন্য তাড়াহুড়ো করবেন না। কারণ সুযোগ বুঝে অটোওয়লা অতিরিক্ত ভাড়া ডিমান্ড করে কারণ আপনি তো ভাড়া সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল নন। কাটপাটি স্টেশন থেকে সিএমসি মাত্র 8 কিলোমিটার।
#অটোতে করে সিএমসি হসপিটাল এর সামনের মেন গেটে আসুন, সিএমসির মেনগেটের উল্টো সাইটে গান্ধী রোড আছে। এই গান্ধী রোডের ভেতরে ঢুকে অনেক হোটেল, একটু ভিতরে আসার পর ডানদিকে এবং বাঁদিকে গলি আছে এই গলি গুলোর ভিতরে ভালো ভালো হোটেল আছে। বুদ্ধিমানের কাজ যাবে যে কোন হোটেলে তিন দিনের বুকিং করে ঢুকে পড়ুন। এই তিন দিনের মধ্যে আপনি আপনার পছন্দ এবং পকেট অনুযায়ী হোটেল সিলেকশন করুন এবং সেখানে ট্রান্সফার হয়ে যান। হসপিটালের কাছ থাকলে অনেক সুবিধা হয়।
atOptions = {
'key' : 'c1b97e0d2d2e0d9ea29e37b019969710',
'format' : 'iframe',
'height' : 250,
'width' : 300,
'params' : {}
};
document.write('
#যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হসপিটালে পৌঁছান। যাবার সময় রোগীর আধার কার্ড ও একটা পেন নিয়ে অবশ্যই যাবেন।
#হসপিটালের এন্ট্রান্স থেকেই প্রচুর সিকিউরিটি গার্ড পাবেন যেখানেই সমস্যা হবে সিকিউরিটি গার্ড কে জিজ্ঞাসা করবেন , সিকিউরিটি গার্ড আপনাকে অনেক হেল্প করবে। আপনি যদি প্রথমবার ভেলোরে গিয়ে থাকেন তাহলে সিকিউরিটি গার্ডকে বলুন আপনি প্রথম ভেলোরে এসেছেন, কোথায় রেজিস্ট্রেশন করতে হবে সিকিউরিটি গার্ড আপনাকে দেখিয়ে ।দেবে যদি আপনি বাংলাদেশ থেকে আসছেন তাহলে সেক্ষেত্রে আপনার জন্য কিছু আলাদা নিয়মকানুন থাকবে।
#রেজিস্ট্রেশন ফরম ফিলাপ করার পর ইনকোয়ারিতে জমা করুন।
#ইনকয়ারি থেকে আপনাকে একটা স্লিপ দেওয়া হবে আপনি কোন ডাক্তার দেখাবেন কিসের জন্য এখানে এসেছেন এবং কোন ডিপার্টমেন্টে দেখাবেন সমস্ত কিছু লিখে একটা স্লিপ আপনাকে দেবে। এবং এই স্লিপ ক্যাশ কাউন্টারে জমা করতে হবে
#ক্যাশ কাউন্টার। এদের অনেকগুলো ক্যাশ কাউন্টার আছে তবু সমস্ত জায়গাতেই লম্বা লাইন ।লম্বা লাইন দেওয়ার পর আপনি যখন কাউন্টারে পৌঁছাবেন সেখানে গিয়ে আবার সবকিছু বলতে হবে। এখান থেকে আপনাকে ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট স্লিপ দেয়া হবে এবং সেই স্লিপের কোন বিল্ডিং এ হবে তার রিপোর্টিং টাইম কোন সময় সবকিছু উল্লেখ করা থাকবে। ডাক্তারি ফ্রিস বাবদ কত টাকা তারা নিচ্ছে সেটা উল্লেখ করা থাকবে।
এখানে যদি ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট পেতে অনেক দেরি হয় তার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা আছে আপনি কাউন্টারে বলুন তৎকাল পরিষেবা পাওয়া যাবে কি? তাহলে তৎকাল কাউন্টারটি আপনাকে দেখিয়ে দেবে এবং ওখান থেকে আপনি তৎকাল পরিষেবায় খুব তাড়াতাড়ি ডাক্তার দেখাতে পারবেন।
এখানে রোগীর একটা ডিজিটাল কার্ড তৈরি হয়, ঠিক এটিএম কার্ডের মত দেখতে। এই কার্ড বাবদ বর্তমানে ১০০ টাকা নেওয়া হয়। এই কার্ডেই রোগীর যাবতীয় ডেটা বা তথ্য রাখা হয়। ক্যাশ কাউন্টার থেকে এই কার্ড পাওয়া যায় না। ক্যাশ কাউন্টার এর কাজ সম্পন্ন করার পর আপনাকে এই কার্ডের কাউন্টারে লাইন দিতে হবে এবং কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। কার্ড সংগ্রহ হয়ে গেলে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ।
আপনাকে যে অ্যাপয়েনমেন্ট স্লিপ দেওয়া হয়েছে সেখানে সবকিছু লেখা আছে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ুন। প্রথমে কোন বিল্ডিংয়ে যেতে হবে সেটা লেখা আছে তারপরে রিপোর্টিং টাইম। আপনার হাতে যদি অনেক সময় থাকে আবার হোটেলে ফিরে যান বিশ্রাম করুন সময় মত আবার হসপিটালে আসুন।
#অ্যাপার্টমেন্ট স্লিপে উল্লেখিত বিল্ডিং নাম অনুযায়ী আপনি সেখানে গিয়ে লাইন দিন সিকিউরিটি গার্ডকে স্লিপ দেখান সিকিউরিটি গার্ড আপনাকে হাতে ব্যান্ড পরিয়ে দেবে এবং সেই ব্যান্ড নিয়ে আপনি যতবার খুশি এই বিল্ডিংয়ে ঢোকা এবং বেরোনো করতে পারবেন। মনে রাখবেন রোগীর সঙ্গে একজন তার বাড়ির লোকই যাওয়ার অনুমতি আছে ছোট বাচ্চা থাকলে তাকে নিয়ে যেতে পারেন।
অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্লিপে কত নাম্বার ফ্লোর এবং কত নাম্বার রুমে আপনাকে দেখা হবে সেটা উল্লেখ করা থাকে।
উল্লেখিত রুমে আপনি গিয়ে দেখা করুন। স্লিপ জমা দিন আবার আপনাকে একটি ক্রমিক নাম্বার ও টাইম দিয়ে দেওয়া হবে। এই ক্রমিক নাম্বার অনুযায়ী আপনাকে ডাক্তারের চেম্বারে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে। ক্রমিক নাম্বার পাওয়ার পরও একটা ছোট্ট কাজ থাকে। ওখান থেকেই জানিয়ে দেওয়া হবে আপনাকে অন্য একটা কাউন্টারে গিয়ে দেখা করতে হবে সেখানে গেলে আপনার স্লিপটা নেওয়া হবে এবং অনেকগুলি আপনার নামের স্টিকার আপনার অ্যাপার্টমেন্ট স্লিপে যুক্ত করে দেওয়া হবে। এবার আপনাকে ডাক্তার চেম্বার এর বাইরে সিটে বসে অপেক্ষা করতে হবে, মাইকে আপনার নাম ঘোষণা করলে রুমের ভেতরে গিয়ে ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করতে হবে।
#প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রে ডাক্তার নানা রকম পরীক্ষা করার নির্দেশ দেয় ।
#ডাক্তার বাবু প্রথমেই রোগীকে প্রশ্ন করে আপনি কোন ভাষায় সাবলীল হিন্দি বাংলা ইংরেজি। আপনি যে ভাষায় সাবলীল ডাক্তারবাবু সেই ভাষাতেই কথা বলেন।এবং জিজ্ঞাসা করে আপনার কি হয়েছে ,সমস্যা কবে থেকে, পুরনো কাগজপত্র কি আছে দেখান। ডাক্তার সমস্ত কিছু কানে শোনেন আর সামনেই থাকে কম্পিউটার ,উনি সব কিছু আপনার ডেটা কম্পিউটারে এন্ট্রি করতে থাকেন।
প্রয়োজনে ফিজিক্যাল চেকআপ ও করেন, এবং আপনার রোগ অনুযায়ী আপনাকে টেস্টে পাঠান।
#ডাক্তারবাবু পেস্ক্রিপশন স্লিপ এ টেস্ট বাবদ কত টাকা খরচ হবে এবং পরবর্তী এপয়েন্টমেন্ট এর ডেট এবং তার ফিস উল্লেখ করে দেন।
#আবার আমাকে প্রথমে ক্যাশ কাউন্টারে যেতে হয়। ক্যাশ কাউন্টারে ক্যাশ অথবা ডেবিট কার্ডের সাহায্যে পেমেন্ট করা যায়।
পেমেন্ট করার পর সেখান থেকেই নেক্সট ডক্টর এপয়েন্টমেন্ট স্লিপ এবং কোথায় কি টেস্ট করতে হবে সেই সব স্লিপগুলো পাওয়া যায় ।সেইসব স্লিপে কোন বিল্ডিং ,কোন রুমে, কোথায় কি হয়? সব কিছু লেখা থাকে।
সেখান থেকে আবার স্লিপ নিয়ে যেখানে যা টেস্ট হবে সেখানে সেই স্লিপ জমা দিতে হয়, এবং টেস্ট গুলি করাতে হয়
#অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই সব টেস্টগুলো সেদিন আর হয়না। ক্যাশ যত তাড়াতাড়ি জমা দিতে পারবেন ডেট তত তাড়াতাড়ি পাওয়া যায়।
বলা বাহুল্য সিএমসি তে একটু সময় লাগে। হয়তো টেস্টের ডেট দুদিন পরেও দেয়া হতে পারে। সুতরাং আপনার প্রথম দিনের কাজ শেষ।
#এবার হোটেলে ফিরে আসুন। প্রথম দিন দুপুরবেলা হোটেলেই খাওয়া-দাওয়া করে নিন। অল্প বিশ্রামের পর আপনার মনের মতো হোটেল এবং তার রেট কত খোঁজ খবর করুন। এটা করতে প্রায় ঘন্টা দুই তিন চলে যাবে।
#হোটেল
এই হোটেলগুলি বাবুরাও স্ট্রিটে
১ হোটেল অ্যাপোলো ২ বিষ্ণু লজ ৩ এম এস লজ ৪ আর এস মেনশন ৫ হোটেল গায়ত্রী ইত্যাদি ইত্যাদি
এই সমস্ত হোটেলগুলি একদম হসপিটালে সামনে গান্ধী রোডে ঢুকে বাবুরাও স্ট্রিটের ওপর।
গান্ধী রোড এর ওপরে অনেকগুলি হোটেল আছে।
যেমন শ্রীনিবাস লজ, এই হোটেলে লিফট আছে। রুম গুলো ভালো ছাদের উপর কমন কিচেন স্পেস।
যে হোটেলে লিফটে আছে সেই হোটেলেই থাকা ভালো কারণ আপনাকে প্রায় কম করে দিন ১৫ থাকতেই হবে। সিঁড়ি ভাঙতে মোটেই ভালো লাগেনা দিনে অন্তত তিন থেকে চার পাঁচবার সিঁড়ি দিয়ে উঠা বা নামা করতে খুবই কষ্ট হয়। বিষ্ণুতে ও লিফট আছে। আপনাকে প্রতিদিন ছাদে উঠতে হবে কারণ জামাকাপড় ধুয়ে শুকানোর জন্য। সেই কারণে লিফট না থাকলে খুবই কষ্ট হয়। আপনি যদি গ্রাউন্ড ফ্লোর ও থাকেন সে ক্ষেত্রেও আপনার জন্য লিফটের প্রয়োজন কারণ জামাকাপড় শুকানোর জন্য ছাদে আপনাকে যেতেই হবে। প্রথম প্রথম রান্না করতে পারবেন না একটু সেটাপ হয়ে গেলে বাসনপত্র অল্প কিছু কিনে নিন আর গ্যাস বাইরে থেকে ভাড়া করে নিন। রান্না করে খাওয়াটাই ভালো। এখানে বাসনপত্র ভাড়া পাওয়া যায়। নিজেরা রান্না করে খেলে নিজেদের পছন্দমত খাবার খেতে পারবেন অল্প খরচে।
এখানে সবকিছু পাওয়া যায় পশ্চিমবঙ্গের মতই । এখানে মাছ মাংস ডিম শাকসবজি মুদির দোকান সবই আপনার হোটেলের কাছে আছে।
এখানকার দুধ খুব ভালো অবশ্যই খেয়ে দেখবেন। সিএমসি ক্যাম্পাসের মধ্যে একটি দুধের কাউন্টার আছে সব সময় এখান থেকে দুধ কিনুন ন্যায্য মূল্যে ।পশ্চিমবঙ্গের প্যাকেট জাতদুধের চেয়ে এখানকার প্যাকেট জাত দুধের স্বাদ অনেক ভালো। এই দুধের দোকানে ক্যাশ ট্রানজেকশন করতে হয় অনলাইন ট্রানজেকশন হয় না। এখানে কলা 🍌 খুব সুস্বাদ। খেতে ভুলে যাবেন না।
এখানে সমস্ত কেনাকাটা অনলাইন ট্রানজেকশনে করুন তাহলে আপনার হিসাবটা ও খুব স্বচ্ছভাবে মোবাইলে রয়ে যাবে। খুচরো পয়সা দেওয়া নেওয়ার কোন সমস্যাই থাকবে না
জল
#রান্না করার জল যদি আপনি হোটেল থেকে না নিতে চান তাহলে সিএমসির মেন গেটের ভিতরে পাশেই জলের কাউন্টার আছে সেখান থেকে আপনি জল সংগ্রহ করতে পারবেন।
হসপিটাল
#পরের দিন সকাল সকাল রান্না করে হসপিটালে যান। আপনার যত রকম টেস্ট গুলো আছে সবগুলো অ্যাপয়েন্টমেন্ট অনুযায়ী করিয়ে নিন। এখানে টেস্ট করার পর রিপোর্ট নেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। ডাক্তার এপয়েন্টমেন্ট অনুযায়ী আপনি আবার ডাক্তার দেখাতে চলে যান। আপনি প্রথমে যে এটিএম কার্ডের মত ডিজিটাল কার্ড পেয়েছিলেন সেই কার্ডে আপনার সমস্ত তথ্য রেকর্ড হয়ে যায়। ডাক্তারের কাছে ওই কার্ডটি দিলেই ডাক্তার বাবু কম্পিউটারের সমস্ত রিপোর্ট আপনার দেখে নেবেন।
#এরপর ডাক্তারবাবু আবার একটি প্রেসক্রিপশন স্লিপে আপনার মেডিসিনের জন্য কত টাকা লাগবে সেটা উল্লেখ করবেন এবং কোডিং এ ওষুধ লিখে দেবেন।
এরপরে যদি অন্য কোন ব্যবস্থার প্রয়োজন হয় তাহলে ডাক্তারবাবু সেটাই আপনাকে ফরওয়ার্ড করবেন।
আবার আপনাকে ক্যাশ কাউন্টারে যেতে হবে মেডিসিনের জন্য টাকা জমা করতে হবে।
টাকা জমা হয়ে গেলে ক্যাশ কাউন্টার থেকে আপনি আবার একটি স্লিপ পাবেন সেই স্লিপ নিয়ে মেডিসিন কাউন্টারে যেতে হবে। মেডিসিন কাউন্টারে অনেক ভিড় থাকে এখানে আবার টোকেন পাওয়া যাবে সেই টোকেন নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে ডিসপ্লে বোর্ডে আপনার টোকেন নাম্বার উঠলে কাউন্টারে আসুন ওষুধ নিন। ওষুধ কখন কি খেতে হবে ওষুধের প্যাকেটের ওপর প্রিন্টেড করে আঠা দিয়ে কাগজ আটকে দেওয়া হয়। আপনার রোগ অনুযায়ী সম্পন্ন কোর্সের ওষুধ একবারে নিয়ে নিলেই ভালো।
আপনার কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলে আবার ডাক্তারের সঙ্গে ভিজিট করুন। এবং আপনার রিপোর্ট কার্ড যদি আপনি ওঠাতে চান তাহলে ডাক্তার বাবুকে গিয়ে বলুন। ডাক্তারবাবু একটু স্লিপে আবার লিখে দেবেন রিপোর্ট কার্ড তুলতে গেলে কত টাকা লাগে। সেই টাকা ক্যাশ কাউন্টারে জমা দিন। ক্যাশ কাউন্টার থেকে স্লিপ নিন, রিপোর্ট কাউন্টারে গিয়ে স্লিপ জমা দিয়ে প্রিন্টেড কপি নিন। আপনার কি চিকিৎসা হয়েছে, প্রত্যেকটা পরীক্ষার কি ফলাফল, কি ওষুধ প্রেসক্রাইব করা হয়েছে কত ব্যয় হয়েছে সমস্ত কাগজপত্র আপনি পেয়ে যাবেন। এই সমস্ত তথ্য আপনার ডিজিটাল কার্ডে এবং হসপিটালের কম্পিউটারের সার্ভারে রয়ে যাবে।
দর্শনীয় স্থান
বিকেল বেলার অবসর সময়ে ঘরে না থেকে আপনি একটু বেরিয়ে পড়ুন।।
সামনে একটি বড় শিব মন্দির আছে। এটি টিপু সুলতান দুর্গের কাছেই। সিএমসি হসপিটাল থেকে টিপু সুলতান দুর্গের কাছে যেতে মাত্র 10 মিনিট সময় লাগে। আর এই দুর্গ থেকে মন্দিরে যেতে আরো পাঁচ মিনিট সময় লাগে। এই দুটো ঘুরে ঘুরে দেখুন ভালো লাগবে। দুর্গের সামনে বেশ বড় পার্ক আছে সময় পেলেই বিকালে এই পার্কে এসে বসুন ভালো লাগবে নানা রকম টেনশন থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাবেন।
সিএমসি হসপিটাল থেকে বাসস্ট্যান্ডের দূরত্ব মাত্র ১০ মিনিট হেঁটে। বাস স্ট্যান্ড বাস স্ট্যান্ড থেকে বাস ধরে গোল্ডেন টেম্পেলের উদ্দেশ্যে রওনা দিন। এখানে একটি স্বর্ণ মন্দির আছে। বিকেল বেলায় ঘন্টা তিনের সময় নিয়ে বেরিয়ে আসুন ভালো লাগবে।
সিমসির নতুন শাখা রানীপেট ক্যাম্পাস
#সিএম সি এই নতুন শাখা রানী পেট ক্যাম্পাস যেন ফাইভ স্টার হোটেল। সিএমসি হসপিটাল থেকে বিনামূল্যে বাসে করে ২৭ কিলোমিটার দূরে এই হসপিটালের নিয়ে যাওয়া এবং আসা হয়। সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ছটা পর্যন্ত ১০ মিনিট অন্তর অন্তর বাস পরিষেবা আছে। দুপুরের দিকে ১৫ মিনিট অন্তর পরিষেবা পাওয়া যায়। আসা যাওয়া সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। এখানে বর্তমানে গ্যাস, হার্ট, আর নিউরো পেশেন্ট দেখা
আরো অনেক ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে যেগুলো আমি পশ্চিমবঙ্গের হসপিটালে পাইনা।
যেসব ছোট ছোট পরিষেবা গুলো আমাদের এখানে পাওয়া যায় না ওখানে সমস্ত পরিষেবা বিনামূল্যে পাওয়া যায়।
যেমন একটা ওয়ার্ড বয় কে ডাকতে হয় না সে এসে আপনার খোঁজ নিয়ে যায় এবং আপনাকে কি পরিসেবা দিতে হবে সেটা বিনামূল্যে কাজটা করে দেয়।
আরো অনেক ভালো ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে যেগুলো শেয়ার করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
সিএমসি হসপিটালে র সমস্ত ডাক্তার বাবুদের ব্যবহার অসম্ভব ভালো এখানকার সকল স্টাফ মহিলাদের মা বলে সম্বোধন করেন এবং বয়স্ক লোকেদের বাবা বলে সম্বোধন করেন যেটা আমার খুব ভালো লেগেছে। আমাদের পশ্চিমবঙ্গে কিন্তু আমি এটা দেখতে পাই না। তাদের ভদ্রতা আমাদের চেয়ে অনেক ভালো।
#ফেরার সময় টিকিট নিয়ে অনেক সমস্যা হয়। এই জন্য আমি একটু বেশি খরচা করে কাটপাটি থেকে ত্রিপতি। ত্রিপতি থেকে ট্রেনে করে পুরীতে আসি, পুরি থেকে ট্রেনে করে হাওড়ায় আসি। এই টিকিটটা একটু সহজলভ্য হয়েছিল।
আপনাদের ধন্যবাদ জানিয়ে আজকের মত এখানে লেখাটা শেষ করলাম।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন